Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

তুলা চাষে অনন্য সুবিধা ও সম্ভাবনা

তুলা চাষে অনন্য সুবিধা ও সম্ভাবনা
অসীম চন্দ্র শিকদার
উঁচু, সমতল, সুনিষ্কাশিত জমি অর্থাৎ বর্ষার জল উঠেনা, বৃষ্টি জল দাড়ায়না, হালকা সেচের সুুবিধা আছে, মাটির প্রকৃতি দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ যুক্ত হয়, আর কমপক্ষে ২/৩ বিঘা এমন জমি  থাকে তবে অবশ্যই এক দেড় বিঘা জমিতে তুলা চাষ করা সম্ভব। যারা জমিতে বছরে একটি বা দু’টির বেশি ফসল ফলাতে চান না, আবার লাভজন ফসল চাষের কথা ভাবছেন তারা অবশ্যই তুলা চাষ করবেন এবং লাভবান হবেন। কারণ বর্তমানে সিবি-১২সিবি ১৪ সিবি ১৮ প্রভৃতি জাতের তুলা চাষ করে বিঘা প্রতি গড়ে ১২ থেকে ১৫ মন আর হাইব্রিড জাতের তুলা চাষ করে বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ২০মন বীজ তুলা উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে, যার বাজার দর বর্তমানে মন প্রতি (৪০ কেজি) ৩৬,০০.০০ টাকা হিসেবে ৪৩,২০০.০০ টাকা থেকে ৫৪,০০.০০ টাকা একং ৫৪,০০.০০ টাকা থেকে ৭২০০০ টাকার মত। সুতরাং যথেষ্ট লাভজনক।
তুলা চাষে অন্যান্য সুবিধা ও সম্ভাবনা : তুলা ফসলের উৎপাদনকাল ৫ থেকে ৬ মাস। তাই একক ফসল হিসেবে তুলা চাষ বর্তমানে যথেষ্ট লাভজনক। তবে তুলা ফসল উঠার পর অঞ্চল ভেদে আর একটি ফসল যেমন গ্রীষ্মকালিন মুগ, তিল, পাট, বীজের জন্য বাদাম ইত্যাদি চাষ করা সম্ভব। প্রচলিত পাট চাষ আর বর্তমানে গ্রীষ্মকালিন মুগ এবং তিল চাষ এখন যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছে। আবার তুলা ফসলের সাথে সাথী ফসল চাষের সুযোগও আছে। যেহেতু তুলার সাড়ি থেকে সাড়ি কমপক্ষে তিন ফুট (৯০ সেমি.) থাকে তাই মাঝের ফাকা জায়গা থেকে সহজেই এক/দুই মাসের মধ্যে সবজি এবং শাক জাতীয় বিভিন্ন ফসলের চাষ করা যায়। সাথী ফসলের আয় থেকে তুলা চাষের উৎপাদন খরচের অনেকটাই পুরণ হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে একসারি অন্তর অন্তর সাথী ফসলের চাষ করতে হবে ; যাতে তুলা ফসলের পরিচর্যায় কোন সমস্যা না হয়। এছাড়া সয়াবীন সীম জাতীয় ফসল বিধায় এটি তুলার সাথে খাদ্যের প্রতিযোগিতা করে না। তুলা বীজ থেকে ১৫ থেকে ২০ ভাগ উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ তেল পাওয়া যায় যা সয়াবিন তেলের চেয়েও পুষ্টিকর। বর্তমানে ভোজ্য তেলের সমস্যায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া তুলা বীজের খৈলে রয়েছে ২৪ শতাংশ প্রোটিন, আর ২০ শতাংশ ফ্যাট, যা গবাদীপশু ও মৎস্য খাদ্যের জন্য উৎকৃষ্ট।
তুলা বীজের গায়ে লেগে থাকা ফাঁজ ডাক্তারি কাজে ব্যবহার করা হয়। তুলা গাছ জ্বালানির একটি ভালো উৎস। তুলা গাছের পাতা মাটিতে পরে মাটিকে জৈব সারের যোগান দেয়, এছাড়া মাটির উপরিভাগের সার তুলা গাছ ব্যবহার করে না। বিধায় তুলা ফসলের পরের ফসলে তেমন সার প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ে না। এছাড়া সারি থেকে সারি এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্বের হিসেবে তুলা চাষে সম্পূর্ণ জমি ব্যবহৃতও হয় না।                                  
তুলা চাষের সময় ও ব্যবস্থাপনা : শ্রাবণ মাস (জুলাই-১৫ থেকে আগষ্ট-১৫) তুলা চাষের উপযুক্ত সময়। তবে অঞ্চল ভেদে তারতম্য হতে পারে। অর্থাৎ যে সব অঞ্চলে শীত আগে আসে সেই সব অঞ্চলে আষাঢ়ের ১৫ হতেই চাষ আরম্ভ করতে হবে এবং শ্রাবনের ১৫ তারিখের মধ্যে চাষের কাজ শেষ করতে হবে। তবে ঢাকা অঞ্চলে ভাদ্রমাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত তুলা চাষ করা যায়।  নাবি তুলা চাষ হলে সঠিক সময়ে সঠিক পরিচর্যা অবশ্যই করতে হবে।
লাইন থেকে লাইনের এবং বীজ থেকে বীজের দূরত্ব কিছুটা কম করে জমিতে চারার সংখ্যা বাড়াতে হবে। বিশেষ করে যারা পাট চাষের পর তুলা চাষ করবেন তাদের ক্ষেত্রে এটি বেশি প্রযোজ্য। বপনের ৪৫-৫০ দিনের মধ্যে প্রথম ফুলটি গাছে ফোটাতে পারলে মনে করবেন সঠিক পরিচর্যা করা হয়েছে।
জমি তৈরি : প্রথমে জমি গভীর ভাবে চাষ করে ঝুর ঝুর করে নিতে হবে। কেন না তুলার শিকড় মাটির অনেক গভীরে যায়।  সাধারণত: তুলা বীজ বপন করতে হয় লাইন থেকে লাইন তিন ফিট (৯০ সেমি:) এবং বীজ থেকে বীজর প্রায় এক ফুট (৩০-৩৫ সেমি:) দূরে দূরে। তবে জমির উর্বরা শক্তির ভিত্তিতে তুলা ফসলের লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব এবং বীজ থেকে বীজের দূরত্ব কম বেশি করা যেতে পারে। অবশ্য এখন তুলা গাছ  খর্বাকৃতি রাখার জন্য মেপাকুয়েট ফ্লোরাইড (চএজ) ব্যবহার করা হচ্ছে।  
সার ব্যবস্থাপনা : জৈবসার তুলা চাষের জন্য খুবই গুরুত্ব পূর্ণ। গোবর সার, মুরগির লিটার ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এ লিটার নতুন অবস্থায় সরাসরি জমিতে প্রয়োগ করা যাবে না। এটিকে অন্তত ছয় মাস মাটিতে গর্ত করে নীচে পলিথিন বিছিয়ে তার মধ্যে রেখে উপরে পলিথিন দিয়ে মাটি চাপা দিয়ে রাখতে হবে। পরে চাষের সময় সেই সার জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। এ সার খুবই শক্তিশালী।
এ সার প্রয়োগ করলে ইউরিয়া সার প্রয়োগ না করলেও চলে। শুধু পটাশ ও টিএসপি প্রয়োগ করতে হয় ; তাও পরিমাণে অর্ধেক ব্যবহার করলেই ভাল ফলন পাওয়া যায়। এছাড়া আরও বেশি ফলনের জন্য ভার্মীকম্পোস্ট, কম্পোস্ট সার, সবুজ সার প্রয়োগ প্রয়োগও করা হচ্ছে। তবে ফলিয়ার স্প্রে তুলা ফসলের জন্য বিশেষ ভাবে গুরুত্ব পূর্ণ, বিশেষ করে পটাশ এবং বোরন। এটি প্রতিবার কীটনাশকের সঙ্গে প্রয়োগ করতে পারলে আরও ভাল হয়।
তুলা ফসলে পোকামাকড় দমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভাল ফলনের জন্য আইপিএম এর ব্যবহার করা প্রয়োজন। এছাড়া ফেরোমন ফাঁদের মাধ্যমে পোকামাকড় দমন ব্যবস্থা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ফলে তুলার উৎপাদন খরচ অনেকটাই কমেছে।
তুলা এখন আর শুধু কৃষক পর্যায়েই সীমাবদ্ধ নেই, শিল্প পতিরাও তুলা চাষে এগিয়ে এসেছে। যেমন ফিনিক্স পলট্রি, প্যারাগন পলট্রি, গিভেন্সী কটন মিল, ওটা কটন মিল, পারটেক্স গ্রুপও জমি ক্রয়ের পর পর লাভজনক ভাবে তুলা চাষ করেছে।
তুলা ফসলের বাজারজাতকরণের নিশ্চয়তা আছে। কিন্তু সবজি বা অন্যান্য ফসলের চাষে সেটা নেই। যাদের তুলা চাষের উপযুক্ত জমি আছে তাদের উচিত তুলা চাষের মৌসুম, কাল বিলম্ব না করে এখনই চাষি ভাইরা নিকটস্থ তুলা উন্নয়ন বোর্ডের অফিসে যোগাযোগ করুণ এবং তুলা চাষ করে নিজে লাভবান হন। সেই সাথে দেশের বস্ত্র শিল্পের উন্নয়নে এবং ভোজ্য তেল উৎপাদনে অবদান রাখুন।
                          
লেখক : ডিপ্লোমা কৃষিবিদ (অব.), তুলা উন্নয়ন বোর্ড, মোবাইল : ০১৫৫২-৩৬২৯০১, ই-মেইল : asim.cdb@gmail.com১০৪/১ (বি-২), শের-এ-বাংলা রোড, রায়ের বাজার, জাফরাবাদ, মোহাম্মদপুর-১২০৭।


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon